সামুদ্রিক মাছ অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার উপায়

বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ  সামুদ্রিক মাছ মানব দেহের জন্য বিষ কার্যকরী হয় দিন দিন মানুষ সামুদ্রিক মাছের প্রতি আগ্রহ বাড়াচ্ছে। 
সামুদ্রিক মাছ অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার উপায়
আর এই ধারণা থেকেই, সামুদ্রিক মাছ অনেকদিন সংরক্ষণ করার বেশ কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ মাছকে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা, ফ্রিজে রেখে দেওয়া এবং মাছ শুকিয়ে শুটকি করে রেখে দেওয়া। মাছের সতেজতা সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল মাছের চারপাশে সমানভাবে বরফ দিয়ে ঠান্ডা রাখা। এটি একটি প্রাচীন নিরাপদ শীতল পদ্ধতি যা মাছকে সবসময় আদ্র রাখে এবং পরিবহনের উপযোগী মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর আমরা জানবো সামুদ্রিক মাছ অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার বেশ কয়টি উপায়-

মাছ ক্ষণ অনেকদিন সংরক্ষণের উপায় কি কি?

মাছ আমি জাতীয় একটি খাবার এবং এটি খুব সহজেই পচনশীল। মাছ পতনশীল বলেই দক্ষতার সাথে সংরক্ষণ করে রাখা উচিত। এজন্যই মাছ বিশেষ করে স্বাস্থ্যসম্মত এবং নিরাপদ ভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। মাসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকায় ফরমালিন বা রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে মাছ সংরক্ষণ করা উচিত নয়। নিচে মাছ সংরক্ষণের উপায় উল্লেখ করা হলো-

  • শুকিয়ে মাছ সংরক্ষণ বা শুটকি করন
  • লবণজাতকরণ
  • বরফ যাতকরণ
  • হিমায়িতকরণ
  • ধুমায়িতকরণ
  • ক্যানিং বার টিনজাত পদ্ধতি

উক্ত উপায় গুলো সবগুলোই প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যা মাছের গুণগত মান অক্ষত রাখে এবং মানবদেহের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। এছাড়াও মাছ সংরক্ষণের বেশ কিছু কৃত্রিম উপায়ে রয়েছে। তবে, মাছ সংরক্ষণ কৃত্রিম উপায় থেকে প্রাচীন উপায় গুলোই বেশ কার্যকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত।

সনাতন পদ্ধতিতে সামাজিক মাছ সংরক্ষণ করার উপায়

প্রাচীন সময় থেকেই বিভিন্ন জাতের মাছ সংরক্ষণ করার বেশ কিছু নিয়ম ও রীতি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সনাতনের পদ্ধতিতে বা প্রাচীন পদ্ধতিতে মাছ সংরক্ষণ করা। প্রাচীন পদ্ধতিতে সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণের জন্য প্রধানত তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যা হল-রোদে শুকানো, লবণ দেওয়া এবং ধুমায়িত করা।

রোদে শুকানোঃ যে মাছ সংরক্ষণ করা হবে ওই মাছগুলোকে প্রথমে ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। মাছ রোদে শুকাতে দিলে মাছের ভিতর থাকা জলীয় অংশ কমে দেয় এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির রোধ করে যার ফলে মাছ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়।


লবণ দেওয়াঃ মাছের গায়ে লবণ মা ও মাছকে সংরক্ষণ করা যায়। যখন মাছের গায়ে লবণ মাখানো হয় তখন মাছের মধ্যে থাকা জলীয় অংশ লবণ শোষণ করে নাই এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কম করে। এই পদ্ধতিতে মাছকে দীর্ঘ সময় লবণের স্তূপের মধ্যে রাখা হয় এবং একই সাথে লবণ দ্রবণেও মাছকে ডুবিয়ে রাখা হয়।

ধুমাইত করাঃ মাছকে বিভিন্ন ভাবে ধূমপানের মাধ্যমে শুষ্ক করে সংরক্ষণ করা হয়। অনেকগুলো মাছকে একসাথে ধুমার মধ্যে রেখে মাছের ভিতর থেকে জলীয় অংশ শোষণ করে যার ফলে মাছের মধ্যে ক্রিওসোট উপাদান জমা হয় এবং তাপের মাধ্যমেও মাছের সংরক্ষণ করা যায়।

উক্ত পদ্ধতির সবগুলোই মাছকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে বিশেষ করে যখন আধুনিক হিমায়ন বা অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল না।

ক্যানিং বা তিন জাত পদ্ধতিতে মাছ সংরক্ষণ করা

ক্যানিং বা টিন জাত করুন পদ্ধতি হলো সেই পদ্ধতি যেখানে মাছকে বায়ু নদী পাত্রে রেখে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে জীবাণুমুক্ত করা হয়। ক্যানিং বা টিন জাত করন পদ্ধতি হল মাছ সংরক্ষণের পদ্ধতি, যেখানে মাছকে বায়ু নদী পাত্রে (যেমন টিনের কেন ) ভোরে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে সংরক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে মাছের গুণগত মান বজায় থাকে এবং এটি সাধারণত 1 থেকে 5 বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায় বলে ধারণা করা যায়।

ক্যানিং বা টিন জাত করন প্রক্রিয়ার মোট পাঁচটি ধাপ রয়েছে। যার মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণ করা হয়। ধাপগুলো হলো-

  • মাছ বাসায় এবং প্রস্তুতি
  • প্রি- ট্রিট্মেন্ট
  • প্যাকেজিং
  • সিলিং
  • তাপ প্রয়োগ
উক্ত পদ্ধতিতে মাছ সংরক্ষণ করা হলে দীর্ঘ সময় ধরে ভালো থাকে এবং যেকোনো সময় ব্যবহার এবং খাওয়ার জন্য উপযোগী থাকে।

মাছ সংরক্ষণ প্রয়োজন কেন?

মাছ সংরক্ষণের প্রধান কারণ হলো মাছের পচন রোধ করা এবং এর গুণগত মান বজায় রাখা। মাছ আমি জাতীয় খাবার। মাছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ রয়েছে যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মা যেহেতু পছন্দের খাদ্য, তাই এটি ধরার পর থেকে এর প্রথম শুরু হয়ে যায়। আর মাছের পচন রোধ করা এবং খাদ্য হিসেবে নিরাপদ রাখার জন্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

মাছ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাঃ

মাসের মধ্যে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণের মাধ্যমে অক্ষুন্ন রাখা যায়। মাছ যেহেতু পচনশীল খাদ্য আবার মাছ মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান তাই মাঠ সংরক্ষণ করা এবং মাছের গুণগত মান বজায় রাখা উচিত।


মাছের পচন রোধ করাঃ মাছ পচনশীল খাদ্য হওয়ায় সংরক্ষণের মাধ্যমে পচন প্রক্রিয়ায় ধির করে মাছের গুণগত মান বজায় রাখা যায়।


খাদ্য উপাদান রক্ষা করাঃ মাছ আমিষ জাতীয় খাবার। মাছের মধ্যে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্ট উপাদান সংরক্ষণের মাধ্যমে অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব।

বাজারজাতকরণের সুবিধাঃ মাছকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহন করা সহজ হয় এবং এতে করে মাছের প্রাপ্যতা বাড়ে।


অপচয় কমানোঃ মাছ যেহেতু পচনশীল খাদ্য তাই সংরক্ষণের মাধ্যমে মাছের অপচয় রোধ করা যায়, যা অর্থনৈতিকভাবেও সহজলভ্য।

উপসংহার

নিরাপদ মাঠ সংরক্ষণের মাধ্যমে মাছের খাদ্য উপাদান যেমন-আমিষ ও খনিজ লবণের মান সংরক্ষণ করা যায়। মাছ যেহেতু মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান এবং এর সাথে মাছ একটি পচনশীল খাদ্য হওয়ায় এটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। মাছ সংরক্ষণ সেই প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে তবে, বর্তমান সময়ে মাছ সংরক্ষণের বেশ কিছু সহজ মাধ্যম থাকলেও প্রাচীনকালের সনাতন পদ্ধতির মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণ করায় সর্বোত্তম। কারণ সনাতন পদ্ধতিতে মাছ সংরক্ষণ করা হলে মাছের গুনাগুন এবং স্বাস্থ্যমান বজায় থাকে।





ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url