স্টারলিং কি? স্টার্লিং ব্যবহারের নিয়ম

ওয়াইফাই রাউটার রিসেট মারার উপায় স্টার্লিং মূলত একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। যা স্টারলিংক সার্ভিসেস, এল এল সি দ্বারা পরিচালিত করা হয়। 

ইস্টার লিঙ্কের এই সংস্থাটি একটি আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ পরিসেবা দাতা এবং আমেরিকান মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি স্পেস এক্স এর সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে স্টার্লিং ১২৫টির মতো দেশ ও অঞ্চলে তার সেবা প্রদান করে থাকে।

ইস্টারলিং মূলত দুটি জিনিসকে বুঝায়। যার একটি হলো ব্রিটিশ মুদ্রা " পাউন্ড স্টার লিঙ্ক" এবং অপরটি হল " স্টার্লিং সিলভার" যা বিশেষ এক ধরনের রুপা। এছাড়াও স্টার্লিং বলতে স্টার নাচ গণের পাখি বা স্টাইলিং পাখি কেউ বোঝায়। বর্তমান সময়ে, বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাক্স এর স্পেস এক্স কোম্পানির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা হিসাবে স্টার্লিং বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

যারা সর্বপ্রথম স্টার্লিং ব্যবহার করবে তাদের স্টারলিং ব্যবহার ব্যয়বহুল। যেহেতু, স্টার লিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে বাংলাদেশের সেবা চালু করেছে। প্যাকেজ দুটি হলো-স্টার্লিং রেসিডেন্স এবং রেসিডেন্স লাইট। যার একটি খরচ প্রতিমাসে ৬০০০ টাকা এবং অপরটির খরচ প্রতিমাসের ৪২০০ টাকা। এছাড়াও সর্বমোট সেটআপ যন্ত্র পাতিসহ ৪৭ থেকে ৫০ হাজারের মতো খরচ হয়ে থাকে। তবে, স্টার্লিং যেহেতু স্যাটেলাইট ভিত্তিক তাই স্টার্লিংকে ইন্টারনেট সেবাই কোন স্পিড বা ডেটা লিমিটেশন নেই।

স্টার্লিং হলো স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা যা পৃথিবীর পক্ষে পথে থাকা অসংখ্য ছোট ছোট স্যাটেলাইট মাধ্যমের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা করা। এটি গ্রাহকদের এক ধরনের বিশেষ এন্টেনা ( যা অনেকটা ডিস এন্টেনার মত) ব্যবহার করতে হয়, যা ইতালিঙ্ক স্যাটেলাইট গুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে গ্রাহকদের পরিষেবা দেয়।

আরো পড়ুনঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

 স্টাইল লিংকের মূল ধারণা হলো-পৃথিবীর ঐ সকল প্রান্তে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যেখানে ঐতিহ্যবাহী ইন্টারনেট অবকাঠামো রয়েছে যেমন-অপটিক্যাল তারের মাধ্যমে স্থাপন করা কঠিন এবং ব্যয়বহুল প্রতিস্থাপন। স্টার্লিং যেহেতু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিষেবা প্রদান করে তাই এর মাধ্যমে অতি সহজেই ডেটা স্থানান্তরের জন্য একে অপরের সাথে এবং গ্রাউন্ড স্টেশনের সাথে যোগাযোগ রাখে।

স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক ঃ ইস্টারলিং , পৃথিবীর কক্ষে ছোট ছোট অসংখ্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করে যা পৃথিবীর চারপাশের কম উচ্চতায় পদক্ষেপ করে।

গ্রাউন্ড স্টেশন ঃ ইস্টার লিংকে যে স্যাটেলাইট গুলি ব্যবহৃত হয় সেগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত গ্রাউন্ড স্টেশনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখে এবং এই গ্রাউন্ড স্টেশন গুলি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে সাথে সংযুক্ত থাকে।

এন্টেনা এবং রাউটার ব্যবস্থা ঃ ইস্টার লিঙ্ক ব্যবহারের জন্য গ্রাহকদের একটি এন্টেনা প্রতিস্থাপন করতে হয়, যা ইস্টার লিঙ্ক স্যাটেলাইট থেকে সংকেত গ্রহণ করে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা গ্রাহক এর কাছে প্রেরণ করে।

ডেটা ট্রান্সমিশনঃ যখন একজন স্টাইলিং ব্যবহারকারী গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ পাঠায়, তখন সংকেত প্রথমে এন্টেনা থেকে স্যাটেলাইটে যায্‌ তারপর সেই সংকেত সরাসরি গ্রাউন্ড স্টেশনে পৌঁছায়। গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সেই ডাটা মূল ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে যায় এবং ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছায়। যার মাধ্যমে একজন স্টাইলিং ব্যবহারকারী স্বাচ্ছন্নভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করতে পারে।

যেহেতু স্তার্লিং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিষেবা প্রদান করে সেহেতু, স্টারলিং অত্যন্ত এবং সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলেও দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম। পৃথিবীর কক্ষে অসংখ্য স্যাটেলাইট বিরাজ করে যা ব্যবহার করে স্টার্লিং গ্রাহকদের কাছে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করে। স্টারলিং ব্যবহারের মূল সুবিধা হল প্রত্যন্ত এবং দুর্গম এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা।

 যেহেতু, সাধারণত ফাইবার অপটিক কেবল দুর্গম এবং প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে অক্ষম , সে সকল স্থানে তার লিংক এর ব্যবহার সর্বোত্তম। এছাড়াও দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার এবং মোবাইল ব্রডব্যান্ড বিস্তৃতিতে স্টারলিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্টারলিংক বেশ জনপ্রিয় একটি ইন্টারনেট মাধ্যম। ১২৫টির বেশি দেশে স্টার লিঙ্ক তাদের ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রথমের দিকে, স্টারলিং ব্যবহার ব্যয়বহুল হলেও এর জনপ্রিয়তা বেশ। কারণ স্টারলিংক এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত এবং দুর্যোগপূর্ণয় পরিস্থিতিতেও পরিষেবা পাওয়া সম্ভব। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন যে, ইস্টার লিঙ্ক এর মাধ্যমে পৃথিবী আরো উন্নত হবে। যা আগামী প্রজন্মের জন্য বেশ কার্যকরী এবং উপযোগী।